চাঁপাইনবাবগঞ্জে ওষুধ ব্যবসায়ীদের সমিতিতে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা

এক পক্ষের অনুপস্থিতিতে আরেক পক্ষের কমিটি গঠন

লাইভ রিপোর্ট ৬ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ওষুধ ব্যবসায়ীদের সমিতিতে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা

ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ কেমিস্টস্ অ্যান্ড ড্রাগিস্টস্ সমিতি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সভা ও কমিটি গঠনকে কেন্দ্র দুটি পক্ষের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। সোমবার সাধারণ সভায় এক পক্ষের অনুপস্থিতিতে আরেক পক্ষ নতুন কমিটি গঠন করে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র হয় উত্তেজনা।

নতুন কমিটি আগের কমিটির নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। যদিও আগের কমিটি তা প্রত্যাখ্যান করেছে। 

কেমিস্টস্ অ্যান্ড ড্রাগিস্টস্ সমিতির জেলা শাখার সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের টাউনক্লাবের সাধারণ সভা ডাকেন সংগঠনের আহ্বায়ক মসিউর রহমান বেনু। মূলত চার বছরের আহ্বায়ক কমিটি ভেঙ্গে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্যই এ সাধারণ সভা ডাকা হয়। সমিতির সদস্যরা মনে করেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকার কারণে সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল হচ্ছে না। আর এ জন্য পূর্ণাঙ্গ কমিটির দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। 

তবে সাধারণ সভার আগেই রোববার অনানুষ্ঠানিকভাবে সমিতির নেতৃবৃন্দ আলোচনায় বসেন। ওই আলোচনায় পূর্ববর্তী চার বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে বলা হয় আহ্বায়ক কমিটিকে। কিন্তু তারা কোন হিসাব না দিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ওই অনানুষ্ঠানিক আলোচনা সমাপ্তি ঘটে। এরপর সোমবারের পূর্বঘোষিত সধারণ সভায় উপস্থিত হোন নি আহ্ববায়ক, কোষাধ্যক্ষসহ কমিটির আরও কয়েকজন। এমন পরিস্থিতিতে আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শামসুল আলমের সভাপতিত্বে সভা শুরু হয় এবং নতুন কমিটি গঠন করা হয়। 

শামসুল আলম বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই আমরা সভা করেছি। সভায় ১৬০ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। যেখানে ৭৫ জন সদস্যের উপস্থিত হলেই সভা করার নিয়ম রয়েছে গঠনতন্ত্রে। ওই সভায় ১৩ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কমিটি করা হয়। 

শামসুল আলম আরও বলেন, রোববার সমিতির সদস্যরা আহ্বায়কের কাছে আয়-ব্যয়ের হিসাব চান। তিনি যৌক্তিক কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেন নি। বিগত চার বছরের ব্যাপক অনিয়ম করেছেন তিনি। আয়-ব্যয়ের কোন হিসাব না রেখে অর্থ আত্মসাত করেছেন আহ্ববায়ক মসিউর রহমান। তিনি বলেন, রোববারের অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় মসিউর রহমান উপঢৌকন বাবদ ৩ লাখ টাকা, মোবাইল বিল বাবদ দেড় লাখ টাকাসহ অযৌক্তিক আরও কয়েকটি খাতে কয়েক লাখ টাকা ব্যয় দেখান। এ নিয়ে সদস্যদের মধ্যে বাগবিতণ্ডাও হয়। সমিতির একটি মাইক্রোবাস আছে, কিন্তু সেটিও একজনের নামে করে দেয়া হয়েছে। যা গঠনতন্ত্র পরিপন্থি। এমন কি আহ্বায়ক তার নিজের বাড়িতে সমিতির অফিস করে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে ভাড়া নিচ্ছেন। এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে গেলে উত্তেজনা তৈরী হয়। 

শমাসুল আলম অভিযোগ করেন, সমিতির আহ্বায়ক মসিউর রহমান একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পদ ছাড়াতে চান নি। আর যে কারণে সাধারণ সভায় উপস্থিত হোন নি এবং আয়-ব্যয়ের আনুষ্ঠানিক হিসাব প্রকাশ করেন নি। 

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মসিউর রহমান বেনু। তিনি বলেন, আজকের সাধারণ সভায় জ্যেষ্ঠ ব্যবসায়ীদের কেউ উপস্থিত হন নি। তারা এ সভা প্রত্যাখ্যান করেছে। কারণ বৈধ ক্যাবিনেটকে বাদ দিয়ে গুটি কয়েক নতুন সদস্য নানামূখি অপতৎপরতা চালাচ্ছে। এ তৎপরতার প্রতিবাদস্বরূপ প্রসিদ্ধ ওষুধ ব্যবসায়ীরা সভায় উপস্থিত হয়নি। 

আহ্বায়কের অনুপস্থিতিতে সাধারণ সভার বৈধতা আছে কি-না বা ওই সভায় গঠিত কমিটির বৈধতা আছে কি-না –এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে চান নি মসিউর রহমান। অবশ্য এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সময় হলে অনেক প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। তিনি বলেন, আমার দায়িত্ব পালনের সময় সমিতিকে ৪৫ লক্ষ টাকা অনুদান এনে দিয়েছি বিভিন্ন কোম্পানীর কাছ থেকে। অথচ কোনভাবে একটাকাও ব্যক্তিগতভাবে গ্রহন করিনি।  

নতুন কমিটি

১৩ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে স্বপন ফার্মেসির স্বত্ত্বাধিকারী শামসুল আলমকে। এছাড়াও সহ-সভাপতি হয়েছেন জীবন ফার্মেসির জিন্নাত আলী আরমান, প্রিয়া ফার্মেসির সাজেমুল ইসলাম, রনি ফার্মেসির েআমিনুল ইসলাম মতি। সদস্য হয়েছেন লিমা ফার্মেসির আব্দুর রহিম, গ্রীণ ফার্মেসির ইমতিয়াজ মাশরুর কুইক, বিসমিল্লাহ ফার্মেসির নয়নমুনি রায়হান, এনার্জি ফার্মেসির হারুন অর রশীদ, সেলিনা ফার্মেসির মাইনুল ইসলাম সুমন, ড্রীম ফার্মেসির মেসবাউল হক বাবু, আইডিয়াল ফার্মেসির মিজানুর রহমান, শ্রাবণ ফার্মেসির সইবুর রহমান, সেবা ফার্মেসির আলী আকবর খান।  

 

Read more — স্থানীয়
← Home